কাদিয়ানী সম্প্রদায় কর্তৃক রাসূল সা. এর পরে নবুওত এর দরজা খোলার হীন চেষ্টা
কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের আকীদা হলো, রাসূল সা. এর পরে নবুওত এর দরজা খোলা রয়েছে। তিনি শেষ নবী নন। নাউযুবিল্লাহ। তারা তাদের এই কুফুরী আকীদা প্রমাণ করার জন্য কোরআনের আয়াত বিকৃতি করে উপস্থাপন করে থাকে। কখনো হাদিসের অপব্যাখ্যা করে। আশ্চর্য বিষয় হলো, কোরআনের যে আয়াতে আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রিয় নবী রাসূল সা. কে সর্বশেষ নবী ঘোষণা করেছেন সেই আয়াতকেই তারা নবুওতের ধারা অব্যাহত থাকার পক্ষে উপস্থাপন করে। যেমন সূরা আহযাবে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন,
مَا كَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنْ رِّجَالِكُمْ وَ لٰكِنْ رَّسُوْلَ اللّٰهِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ كَانَ اللّٰهُ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا۠۴۰
“মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্যে কোনো পুরুষের পিতা নহে, বরং সে আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।” -সূরা আহযাব (৩৩) : ৪০ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন হতে অনূদিত তরজমা কোরআন থেকে)
আয়াতের কাদিয়ানী ব্যাখ্যা:
মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’-শব্দের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘হাকীকাতুল ওহী’ নামক পুস্তকে লিখেছে,
“মহা প্রতাপশালী আল্লাহ্ আঁ হযরত সাল্লাল্লাহু আলায়হে ওয়া সাল্লামকে খাতামের অধিকারী বানাইয়াছেন। অর্থাৎ তাঁহাকে পরিপূর্ণ আশিসের জন্য মোহর দেওয়া হয় যাহা আর কোন নবীকে কখনো দেওয়া হয় নাই। এই কারণেই তাঁহার নাম খাতামুন্নাবীঈন সাব্যস্ত করা হইয়াছে। অর্থাৎ তাঁহার পরিপূর্ণ অনুবর্তিতা নবুওয়ত দান করে এবং তাঁহার আধ্যাত্মিক মনোনিবেশ নবী সৃষ্টিকারী হয়। এই পবিত্রকরণ শক্তি অন্য কোন নবী পান নাই।” -হাকীকাতুল ওহী (বাংলা) পৃ. ৭৫
মির্যা কাদিয়ানীর উপরোক্ত বক্তব্যের সোজাসাপ্টা অর্থ হলো, পূর্বে আল্লাহ তাআলা নিজ ইচ্ছায় নবুওত দান করতেন। কিন্তু এখন আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় নয় বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণে নবুওত পাওয়া যাবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসূলের পরিপূর্ণ আনুগত্য করবে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ওপর নবুওতের মোহর মেরে দিবেন আর সে নবী হয়ে যাবে। নাঊযুবিল্লাহ।
কাদিয়ানী ব্যাখ্যার জবাব:
এক.
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আজ পর্যন্ত গোটা মুসলিম উম্মাহর সর্ববাদিসম্মত মত হলো, ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’ অর্থ শেষ নবী। তাঁর পরে আর কোনো নতুন নবী নেই। ইমাম গাজালী রহ. বলেন,
أن الأمة فهمت بالإجماع من هذا اللفظ ومن قرائن أحواله أنه أفهم عدم نبي بعده أبداً وعدم رسول الله أبداً وأنه ليس فيه تأويل ولا تخصيص فمنكر هذا لا يكون إلا منكر الإجماع.
গোটা উম্মত সর্বসম্মতভাবে এই শব্দ (খাতামুন্নাবিয়্যীন) থেকে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিভিন্ন বাণী, কর্ম ও অবস্থা থেকে এটাই বুঝেছে যে, তাঁর পরে কিছুতেই কোনো নবী বা রাসূল নেই। এর মধ্যে কোনো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের সুযোগ নেই। সুতরাং এর অস্বীকারকারী সর্ববাদিসম্মত আকীদারই অস্বীকারকারী। -আল ইকতেসাদ ফিল ই’তেকাদ পৃ. ১৩৭
সুতরাং ইসলামের এই মৌলিক আকীদায় গোটা উম্মতের সর্ববাদিসম্মত ব্যাখ্যার বিপরিতে নতুন কোনো ব্যাখ্যা করা স্পষ্ট কুফুরী ও যানদাকা।
মির্যা কাদিয়ানীর নবুওত দাবি সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
খতমে নবুওত ও মির্যা কাদিয়ানীর নবুওত দাবি (khatmenubuwat.com)
দুই.
আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমকে বিভিন্নভাবে হেফাজত করেছেন। বিশেষভাবে প্রত্যেক যুগের বিদগ্ধ মুফাসসির গণের মাধ্যমে এর অর্থ ও মর্ম সংরক্ষণ করেছেন। মুফাসসিরগণ হাদীস, শরীয়াতের মূলনীতি, আরবী ভাষার মাধ্যমে কোরআনের তাফসীর করেছেন।
খোদ মির্যা কাদিয়ানীই বলেছে,
“কুরআন এমন ইমামগণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়েছে যাদেরকে প্রত্যেক শতাব্দিতে কুরআনের বুঝ দেয়া হয়েছে। যারা কুরআন শরীফের সংক্ষিপ্ত স্থানগুলো রাসূলের হাদীসের মাধ্যমে তাফসীর করে প্রত্যেক যামানায় আল্লাহ তাআলার পবিত্র কালাম ও শিক্ষাকে অর্থগত বিকৃতি থেকে বাচিয়েছেন। -আইয়ামুসসুলহ; রুহানী খাযায়েন ১৪/২৮৮
মির্যা কাদিয়ানীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, কুরআনে কারীমের যে তাফসীর পূর্বের কোনো ইমাম করেননি তা কুরঅনের মাঝে স্পষ্ট বিকৃতি সাধন।
মির্যা কাদিয়ানী আরো লিখেছে,
“নিজের পক্ষ থেকে নতুন কোনো অর্থ আবিষ্কার করাই বিকৃতি ও ইলহাদ। আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে এ থেকে হেফাজত করুক।” – ইযালায়ে আওহাম, রূহানী খাযায়েন ৩য৫০১
সুতরাং কোরআনের কোনো শব্দের বা আয়াতের শরীয়তবিরোধী এমন কোনো অর্থ বা ব্যাখ্যা করা যা ইতিপূর্বে কেউ করেনি তা যে বিকৃতি তা বলাই বাহুল্য।
কাদিয়ানী সম্প্রদায় শত চেষ্টা করেও ‘খাতামুন্নবিয়্যীনে’র নব আবিষ্কৃত অর্থের (অর্থাৎ যার মোহরের মাধ্যমে নবী সৃষ্টি হয়) কোনো দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবে না। না কোরআন থেকে, না হাদীস থেকে, না সাহাবা কেরামের বক্তব্য থেকে আর না আরবী ভাষার কোন নির্ভরযোগ্য অভিধান থেকে।
তিন.
নুবওত দাবির পূর্বে মির্যা কাদিয়ানী নিজেই এই আয়াতের অর্থ এভাবে করেছে,
‘মুহাম্মাদ তোমাদের মধ্য থেকে কোন পুরুষের পিতা নন। বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং নবীদের সিলসিলাকে খতমকারি।’ -ইযালায়ে আওহাম; রুহানী খাযায়েন ৩/৪৩১
হামামাতুল বুশরা বইয়ে মির্যা কাদিয়ানী স্বীকার করেছে যে, সূরা আহযাবের এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা রাসূর সা.কে শেষ নবী ঘোষণা করেছেন। মির্যা কাদিয়ানী লিখেছে,
“তুমি কি জানো না আমাদের দয়ালু ও কৃপালু প্রভূ আমাদের মহানবী সা.কে বিনা ব্যতিক্রমে ‘খাতামান নবীঈন’ আখ্যা দিয়েছেন। ... আমাদের নবী সা. এর পরে আমরা যদি কোনো নবীর আগমনকে বৈধ আখ্যা দেই তাহলে আমাদেরকে নবুয়তের ওহী বন্ধ হওয়ার পর এটিকে অব্যাহত রাখার বৈধতা খুঁজতে হবে। - হামামাতুল বুশরা (বাংলা) ৪৮
কিন্তু ১৯০০ সালের পরে মির্যা কাদিয়ানীর সূর পরিবর্তন হয়ে যায় যখন যে পরিষ্কার ভাষায় নবী হবার দাবি করে। হাকীকতুল ওহী ১৯০৭ সালে লেখা বই।
দেখা যাচ্ছে, নবুওত দাবি ও খতমে নবুওত এর অর্থের ব্যাপারে মির্যা কাদিয়ানী বক্তব্য দ্বিমুখী ও পারষ্পারিক বিরোধপূর্ণ। আর মির্যা কাদিয়ানী নিজেই বলেছে, স্ব-বিরোধি বক্তব্য কেবল পাগল, মুনাফিক, জাহেল ও মিথ্যাবাদিই দিতে পারে। দেখুন, রুহানী খাযায়েন’ ১০/১৪১, ১৪২ ও ২১/২৭৫
আরো জানতে ক্লিক করুন -------- আকীদায়ে খতমে নবুওয়াত: মির্যা কাদিয়ানীর স্ববিরোধী বক্তব্য (khatmenubuwat.com)
পাঁচ.
মির্যা কাদিয়ানী নিজেও তার বিভিন্ন পুস্তকে খাতাম শব্দের অর্থ করেছে ‘শেষ’ বলে। যেমন, চশমায়ে মারেফাত নামক পুস্তকে লিখেছে,
“মাসীহে মাওউদের কয়েকটি নাম হবে। তন্মধ্যে একটি নাম হলো "খাতামুল খুলাফা" অর্থাৎ এমন খলীফা যিনি সবার শেষে আগমন করেন। - চশমায়ে মারেফাত, রূহানী খাযায়েন ২৩/৩৩৩
ইযালায়ে আওহাম নামক বইয়ে লিখেছে,
“আমরা দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ কথার উপর ঈমান রাখি যে, কুরআন কারীম "খাতামে কুতুবে সামায়ী"” - ইযালা আওহাম, রূহানী খাযায়েন ৩/১৭০
তিরইয়াকুল কুলূবে লিখেছে,
‘আমার পর আমার পিতা মাতার আর কোন ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তান জন্ম গ্রহণ করেনি। আমি তাদের জন্যخاتم الأولاد (খাতামুল আওলাদ অর্থাৎ শেষ সন্তান) ছিলাম।’ -তিরইয়াকুল কুলূব; রুহানী খাযায়েন ১৫/৪৭৯
সুতরাং যদি خاتم الأولاد (খাতামুল আওলাদ) এর অর্থ হয়, মির্যা কাদিয়ানী তার পিতা মাতার সর্বশেষ সন্তান। তার পরে তার পিতা-মাতা থেকে ছোট-বড়, সুস্থ-অসুস্থ, যিল্লী-বুরুজী কোন ধরনের সন্তান জন্ম নেয়নি। তাহলে خاتم النبيين (খাতামুন্নবিয়্যীন) এরও একই অর্থ হবে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর কোন ধরনের নবী নেই। চাই শরীয়াতবাহী হোক বা শরীয়াত বিহীন হোক।
আর যদি خاتم النبيين (খাতামুন্নবিয়্যীন) এর অর্থ হয় ‘তাঁর মোহর দ্বারা নবী সৃষ্টি হয়’ (যেমনটি কাদিয়ানী সম্প্রদায় করে থাকে) তাহলে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে خاتم الأولاد (খাতামুল আওলাদ) এরও একই অর্থ করতে হবে। অর্থাৎ ‘মির্যার মোহর দ্বারা তার পিতা মাতার থেকে বাচ্চা সৃষ্টি হবে’। সুতরাং এখন মির্যার পিতা দায়িত্বমুক্ত।
মির্যা কাদিয়ানীর মোহরের মাধ্যমেই তার মায়ের গর্ভ থেকে বাচ্চা পয়দা হবে। কাদিয়ানী সম্প্রদায় কি আদৌ এ অর্থ মানতে রাজি হবেন!
ছয়.
কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের ধর্ম বিশ্বাস হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পরে একমাত্র মির্যা কাদিয়ানী নবুওত লাভ করেছে। মির্যা কাদিয়ানীর আগেও কেউ নবুওত লাভ করেনি। তার পরেও কেও নবুওত লাভ করবে না। মির্যা কাদিয়ানী তার ‘হাকীকাতুল ওহী’ নামক পুস্তকে লিখেছে,
“মোট কথা খোদার ওহী ও অদৃশ্য বিষয়ের এই বিপুল অংশের জন্য এই উম্মতে আমিই একমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তি। আমার পূর্বে এই উম্মতে যত আউলিয়া, আবদাল ও কুতুব চলিয়া গিয়াছেন তাহাদিগকে এই পুরস্কারের বিপুল অংশ দেওয়া হয় নাই। অতএব এই কারণে নবীর নাম পাওয়ার জন্য আমাকেই নির্দিষ্ট করা হইয়াছে। অন্য সকল লোক এই নামের যোগ্য নহে।” -হাকীকাতুল ওহী (বাংলা) পৃ. ৩৩০
এক গালতি কা ইযালা নামক পুস্তকে মির্যা কাদিয়ানী লিখেছে,
‘কিশতিয়ে নূহ’ নামক পুস্তকে লিখেছে,
“মুবারক (আশিসপ্রাপ্ত) তাহারা, যাহারা আমাকে চিনিতে পারিয়াছে। আমি খোদার সকল পথসমূহের মধ্যে সর্বশেষ পথ, এবং আমি তাঁহার যাবতীয় জ্যোতির মধ্যে সর্বশেষ জ্যোতি:। হতভাগ্য সেই ব্যক্তি, যে আমাকে পরিত্যাগ করে, কারণ আমি ব্যতীত সব অন্ধকার।” -কিশতিয়ে নূহ (বাংলা) পৃ. ৭৬; কিশতিয়ে নূহ; রুহানী খযায়েন ১৯/৬১
মির্যা কাদিয়ানীর এই বক্তব্যগুলো থেকে প্রতিয়মান হয়, তার নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মোহর দ্বারা একমাত্র মির্যা কাদিয়ানীই নবুওত লাভ করেছে। তার পূর্বেও কেউ নবুওত লাভ করেনি। তার পরেও কেউ নবুওত লাভ করবে না। অথচ আল্লাহ তাআলা বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করেছেন অর্থাৎ ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’ বলেছেন। মির্যা কাদিয়ানীর কৃত অর্থ অনুযায়ী এর অর্থ হবে, (নবুওত দান করার জন্য) যিনি নবীগণকে নবুওতের মোহর মারেন। সুতরাং তাঁর মোহরের মাধ্যমে কমপক্ষে তিনজন নবুওত লাভ করবে। অথচ কাদিয়ানীদের আকীদামতে নবুওত পেয়েছে মাত্র একজন!!
সাত.
‘হাকীকাতুল ওহী’ নামক গ্রন্থে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’ এর যে ব্যাখ্যা করেছে তার সারমর্ম হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবুওতের মোহর দান করা হয়েছে। যে তাঁর পরিপূর্ণ আনুগত্য করবে তাকে তিনি মোহর লাগিয়ে দেবেন আর সে নবী হয়ে যাবে। কিন্তু মির্যা কাদিয়ানী তার ‘একটি ভুল সংশোধন’ নামক পুস্তিকায় লিখেছে,
“পক্ষান্তরে যদি কেউ খাতমান্নাবীঈন এর মধ্যে এরূপ বিলীন হয়ে যান যে, তাঁর সাথে একান্ত একীভূত হয়ে এবং স্বীয় স্বাতন্ত্রের পূর্ণ বিলোপ সাধন দ্বারা তাঁরই নাম লাভ করেন এবং পরিণামে স্বচ্ছ দর্পণের ন্যায় তাঁর সত্তায় আঁ হযরত (সঃ)-এর ছবি ফুটে উঠে, তাহলে মোহরকে না ভেঙ্গেই তিনি নবী আখ্যা লাভ করেন, কারণ প্রতিচ্ছায়ারূপে তিনি মুহাম্মদ (সঃ)। মুহাম্মদ ও আহমদ নামে অভিহিত এ প্রতিবিম্বিত ব্যক্তির নবী ও রসূলের দাবী সত্তে¡ও সৈয়্যদনা মুহাম্মদ (সঃ)-ই খাতামান্নাবীঈন থাকেন। কেননা এ দ্বিতীয় মুহাম্মদ (সঃ) সে প্রথম মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরই প্রতিকৃতি এবং তাঁর নামে আখ্যায়িত।” -একটি ভুল সংশোধন (বাংলা) পৃ. ৬-৭
মির্যা কাদিয়ানীর এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’ অর্থাৎ শেষ নবী। তাঁর পরে কেউ নবুওত দাবি করলে তাঁর খতমে নবুওতের মোহর ভেঙ্গে যাবে। তবে যদি তিনিই দ্বিতীয়বার আগমন করেন, কারো মধ্যে যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সত্তা বিরাজ করে তাহলে তার নবুওত দাবি খতমে নবুওতের পরিপন্থি নয়। এতে খতমে নবুওতের মোহর ভাঙ্গবে না। কেননা তিনি স্বয়ং মুহাম্মাদ রাসূলুল্লাহ। অন্য কেউ নবুওত দাবি করলে খতমে নবুওতের মোহর ভেঙ্গে যাবে। নাঊযুবিল্লাহ।
মির্যা কাদিয়ানী মূলত হিন্দুদের থেকে পূণর্জনমের অকীদা ধার নিয়ে নিজের নবুওত দাবির রাস্তা পরিস্কার করতে চেয়েছে।
এখন কাদিয়ানীদের কাছে প্রশ্ন, মির্যা কাদিয়ানীর এমন স্ববিরোধি বক্তব্যের কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল? অন্যদিকে মির্যা কাদিয়ানী তো নিজেই বলেছে, স্ববিরোধি বক্তব্য কেবল পাগল, মুনাফিক, জাহেল ও মিথ্যাবাদিই দিতে পারে। দেখুন, রুহানী খাযায়েন’ ১০/১৪১, ১৪২ ও ২১/২৭৫
পরিশেষে বলতে চাই, ইসলামের এই মৌলিক আকীদার অস্বীকার করে কাদিয়ানী সম্প্রদায় মুসলিম হওয়ার দাবি করতে পারে না। তাদেরকে অবশ্যই নিজেদের ধর্ম পরিচয় নিরুপন করতে হবে। কোরআন হাদিসের ভুল ব্যাখ্যা ও বিকৃতি করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার রাস্তা তাদেরকে পরিহার করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে হেদায়েত দান করুক। আমীন
Share
Tweet Whatsapp